ডেস্ক রিপোর্ট : বগুড়া সরকারি আজিজুল হক কলেজে অনার্স প্রথম বর্ষে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের ডোপ টেস্ট বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। প্রায় সাড়ে চার হাজার আসনে ভর্তি হতে শত শত ছাত্রছাত্রী ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোতে ছুটছেন।তবে ৯০০ টাকা থেকে আড়াই হাজার টাকা ব্যয় হওয়ায় দরিদ্র অভিভাবকদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। তারা কর্তৃপক্ষের এ সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করতে অনুরোধ জানিয়েছেন।কলেজ সূত্র জানায়, গত ২ জুন ঢাকায় আইন-শৃঙ্খলা সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে ভর্তির ক্ষেত্রে ডোপ টেস্ট বাধ্যতামূলক করা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর গত ২৯ আগস্ট দেশের সব সরকারি ও বেসরকারি স্কুল-কলেজের প্রধান ও মাঠপর্যায়ে শিক্ষা কর্মকর্তাদের চিঠি দেওয়া হয়। এ চিঠি অনেক প্রতিষ্ঠানে পৌঁছেনি।বগুড়া সরকারি আজিজুল হক কলেজ কর্তৃপক্ষ চিঠি পেয়ে অনার্সে ভর্তিচ্ছুদের ডোপ টেস্ট বাধ্যতামূলক করেছে। এ কলেজে প্রায় সাড়ে চার হাজার ছাত্রছাত্রী ভর্তি করা হবে।তবে সরকারি শাহ সুলতান ও সরকারি মুজিবুর রহমান মহিলা কলেজে ডোপ টেস্ট ছাড়াই ভর্তি করা হচ্ছে। সরকারি শাহ সুলতান কলেজে এবার অনার্সে এক হাজার ৯২০ জন ও মহিলা কলেজে এক হাজার ১৪০ জন ছাত্রছাত্রী নেওয়া হবে। ভর্তির ক্ষেত্রে শাহ সুলতান কলেজে লিখিত ও মহিলা কলেজে মৌখিকভাবে অঙ্গীকারনামা নেওয়া হচ্ছে।এদিকে সরকারি আজিজুল হক কলেজে অনার্স ভর্তিচ্ছুরা ডোপ টেস্টের জন্য শহরের সরকারি, বেসরকারি ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোতে ভিড় করছেন। ডোপ টেস্টের জন্য বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৯৫০ টাকা, সরকারি মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে ৯০০ টাকা ও বেসরকারি ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোতে এক হাজার থেকে আড়াই হাজার টাকা চার্জ নেওয়া হচ্ছে। তবে ভর্তির সময় কম থাকায় অনেকে বাধ্য হয়ে বেশি খরচ করে বেসরকারি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে যাচ্ছেন।সেখানে গিয়েও তাদের দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়িয়ে রক্ত ও প্রস্রাব দিতে হচ্ছে। বাড়তি টাকা খরচ করতে হওয়ায় দরিদ্র অভিভাবকদের মাঝে ক্ষোভ ও হতাশা দেখা দিয়েছে। অনেকে পত্রিকা অফিসে এসে বা সাংবাদিকদের ফোনে তাদের ক্ষোভের কথা প্রকাশ করেছেন।যুগল চন্দ্র নামে এক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী জানান, তার মেয়েকে সরকারি আজিজুল হক কলেজে ভর্তি করাবেন। কিন্তু ডোপ টেস্ট করাতে হাজার টাকা খরচ করতে হচ্ছে।বগুড়া মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে ডোপ টেস্ট করতে আসা সাইফুল ইসলাম, রবিউল আলম, অনন্যা তাবাচ্ছুম প্রমুখ শিক্ষার্থী অভিযোগ করেন, অন্য কলেজে ডোপ টেস্ট করানো হচ্ছে না। অথচ আজিজুল হক কলেজে ডোপ টেস্ট বাধ্যতামূলক। হাতে সময় কম। তারপরও দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করে ডোপ টেস্ট করতে হচ্ছে।রাশেদুল ইসলাম নামে এক অভিভাবক জানান, ডোপ টেস্ট ভালো উদ্যোগ। তবে ফি বেশি হওয়ায় তার মতো অনেক অভিভাবককে হিমশিম খেতে হচ্ছে। এছাড়াও সময় না থাকায় তাদের ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে।বগুড়া সরকারি মুজিবুর রহমান মহিলা কলেজের উপাধ্যক্ষ প্রফেসর ড. বেল্লাল হোসেন জানান, তারা কোনো চিঠি না পাওয়ায় ডোপ টেস্ট ছাড়াই ভর্তি করছেন। তবে ছাত্রীদের কাছে পরবর্তীতে ডোপ টেস্ট রিপোর্ট জমা দিতে মৌখিকভাবে অঙ্গীকার করানো হচ্ছে।সরকারি শাহ সুলতান কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর শহিদুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, আগামীতে ডোপ টেস্ট করতে বাধ্য থাকবে এমন লিখিত অঙ্গীকার নিয়েই শিক্ষার্থী ভর্তি করছেনএ প্রসঙ্গে সরকারি আজিজুল হক কলেজের অধ্যক্ষ শাহজাহান আলী জানান, সরকারি সিদ্ধান্তের কারণে শিক্ষার্থীদের ডোপ টেস্ট করানো হচ্ছে।তিনি আরও বলেন, শুধু তারা নন; দেশের অনেক কলেজে ডোপ টেস্ট করিয়েই অনার্সে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হচ্ছে।